জগন্নাথপুরের যোগননগর সড়কের বেহাল দশা, লাখো মানুষের ভোগান্তি

জগন্নাথপুরের যোগননগর সড়কের বেহাল দশা, লাখো মানুষের ভোগান্তি

মোঃ হুমায়ুন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) স্টাফ রিপোর্টারঃ

পাগলা-জগন্নাথপুর- আউশকান্দী সড়কের মধ্যবর্তী যোগননগর – শ্রীপতিপুর – হায়দরপুর,কৈতক সড়কের যোগলনগর অংশে দীর্ঘ দিন যাবৎ সংস্কার কাজ না হওযায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১১ কিলোমিটার  এই সড়কটি লাখো মানুষের কোনো কাজে আসছেনা। জনসাধারন সহ যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্কুল -কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র /ছাত্রী সহ জনসাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হয়ে পড়েছেন।

২০ শে জুন রোজ রবিবার সরেজমিনে ঘুরে  দেখাযায় ও জানাযায়, সুনামগঞ্জ জেলাধীন পাগলা – আউশকান্দী সড়কের মধ্যবর্তী যোগননগর-হায়দরপুর-কৈতক সড়কের যোগলনগর অংশে প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে জল ও কাদায় একাকার হয়ে আছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল- কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শত শত ছাত্র/ ছাত্রী সহ হাজার হাজার জনসাধারন জীবন- জীবীকার তাগিদে পায়ে হেটে ও যানবাহনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে  চলা ফেরা করছেন। এই সড়ক এর যোগলনগর পয়েন্ট  হয়ে ছাতক উপজেলার প্রায় ১৫ টি গ্রামের স্কুল -কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র -ছাত্রী শিক্ষাঙ্গনে যাতায়াত করার পাশাপাশি  বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন পাগলা- জগন্নাথপুর – আউশকান্দী সড়কে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে কম সময়ে অফিস -আাদলত ও ব্যবসার কাজে যাতায়াত করেন এবং রাজধানী শহর ঢাকায় যাতায়াত করেন। এছাড়াও  জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়ন এর হাজার হাজার জনসাধারণ প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন কাজে জীবন জীবিকার তাগিদে যোগলনগর টু হায়দরপুর – কৈতক সড়কে চলাচল করেন। দীর্ঘদিন ধরে এই আধা কিলোমিটার সড়ক এর সংস্কার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় অত্রাঞ্চল এর জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী ও স্থানীয় বাসিন্দা কাদির,মর্তুজ আলী, আব্দুর রাজ্জাক ও জামাল উদ্দিন  সহ অনেকই আক্ষেপ করে অভিযোগের সুরে বলেন,
দুই বছর আগেই এলাকাবাসী দাবির প্রেক্ষিতে দুটি বড় সেতু নির্মাণ করে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির কাজ হয়। এস এম নুরুল ইসলাম নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কের বেশিরভাগ অংশের কাজ শেষ করলেও এক কিলোমিটার অংশ বাকী রেখেই কাজ বন্ধ করে চলে গেছে । এই সড়ক দিয়ে কাদা-পানি মাড়িয়ে ছাত্র/ছাত্রী শিক্ষক বৃন্দসহ জন-সাধারন যাতায়াত করতে হচ্ছে। এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলতো দুরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রায় সময়ই ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। যেকোনো মুহুর্তে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিদায় স্কুল- কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র,শিক্ষক পথচারীদের অত্র সড়ক দিয়ে চলাচলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নিরসনে  জগন্নাথপুর উপজেলা, সুনামগঞ্জ জেলা সদর ও বিভাগীয় শহর সিলেট সহ রাজধানী শহর ঢাকার  সাথে যোগাযোগ স্থাপনকারী এই সড়কটি তড়িত গতিতে সংস্কারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু দৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।

কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোঃ তারা মিয়া বলেন , যোগননগর-শ্রীপতিপুর-হায়দারপুর-কৈতক সড়কের এক কিলোমিটার অংশ কাজ না হওয়ায় তিন বছর হয় এই সড়ক এলাকাবাসীর কাজে আসছে না। সম্প্রতি আধা কিলোমিটার কাজ করে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। যে অংশে কাজ বাকী আছে ওখানে কাঁদা লেগে আছে। সামান্য বৃষ্টি হলে এই সড়ক দিয়ে পায়ে হেটেই যাতায়াত করা যাচ্ছে না। যানবাহন চলবে কীভাবে। সামান্য অংশের জন্য ১১ কিলোমিটার সড়ক ২৫-৩০ টি গ্রামের মানুষ ব্যবহার করতে পারছেন না।শ্রীপতিপুরের পাশে ডাউকা নদীর উপর সেতু হয়েছে। কিন্তু যোগননগর থেকে আধা কিলোমিটার সড়ক পাকা হয়নি। এই অংশকে কমপক্ষে ৩ ফুট উঁচু করে পাকা করতে হবে। এই সড়ক হলে এই দিকেই কৈতক হয়ে কম সময়ে মানুষ সিলেট যেতে পারবে।

সুনামগঞ্জ এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল হক বললেন, ১১ কিলোমিটার এই সড়কের আধা কিলোমিটারেরও কম অংশে কাজ বাকী। ওখানে কার্পেটিং হবার কথা ছিল। কিন্তু এই অংশে নরম মাটি এবং বর্ষায় পানিও ওঠে যায়, এজন্য আরসিসির প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সপ্তাহে এই প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদন হবার কথা। আরসিসির প্রস্তাব অনুমোদন হলে ঠিকাদারের কাজ করতে সমস্যা হবে না।

সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, এই সড়কের সামান্য অংশের কাজ বাকী। ওখানে ছোট একটি কালভার্ট ভেঙে আমরা বড় কালভার্ট করতে চাচ্ছি। কিছু অংশে আরসিসির কাজ করা জরুরি। এলজিইডি’র সদর দপ্তরের একটি প্রতিনিধি দলও এই অংশ সম্প্রতি দেখে গেছেন। দুয়েক দিনের মধ্যেই ওখানে কীভাবে কাজ হবে, এমন সিদ্ধান্ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানাবেন। তখন কাজ করতে ঠিকাদারের আর কোন সমস্যা থাকবে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন